করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৭ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে খুলছে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

খুলছে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজার পৌরসভার ভেতরে অবস্থিত বিনোদনকেন্দ্রগুলোও। একই সঙ্গে পৌর এলাকার হোটেল-মোটেলও শর্তসাপেক্ষে সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ভ্রমণ করতে হবে। সেই সাথে হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশাসনের নির্দেশনা না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা কমলেও ঝুঁকি এখনো আছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে স্থবিরতা চলে এসেছে। তাই নির্দিষ্ট কিছু শর্তে সীমিত আকারে সমুদ্র সৈকত হোটেল-মোটেলসহ কক্সবাজার পৌর এলাকা কেন্দ্রিক পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জেলার অন্য বিনোদনকেন্দ্রগুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনোদনকেন্দ্রগুলো চালু করতে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কয়েক দফা বসে নীতিমালা তৈরি করেছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দিতে সেক্টরভিত্তিক নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে দীর্ঘ সময় পর সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস পর হোটেল-মোটেল গেস্টহাউসগুলো চালু হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সিদ্বান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। প্রশাসনের নির্দেশনা মেনেই আমরা পর্যটকদের সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পর্যটকদের সাড়াও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতা ঐতিহ্যবাহী ঝাউবন রেস্তোরাঁর মালিক মো. আলী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একটু কমলেও এখনো একেবারে বন্ধ হয়নি। তাই জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা রেস্তোরাঁ চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, পরিস্থিতিতেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারবো।

অন্যদিকে, প্রশাসনের নির্দেশনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় দুই লাখ মানুষ জড়িত। তাদের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়া সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই স্বাস্থবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। পাশাপাশি বিষয়ে প্রণীত সব নিয়ম, শর্ত এবং জাতীয় গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য যে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১৮ মার্চ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ আশপাশের বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এরপর সাধারণ ছুটির সময়সীমা শেষ হলেও এখন পর্যন্ত সেগুলো বন্ধ ছিল।